বেসরকারি হাসপাতালে ৭০ শতাংশ শিশুর জন্ম সিজারে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ফানাম নিউজ
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৩:২৪

দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৭০ শতাংশেরও বেশি শিশুর জন্ম সিজারে হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কোনো সভায় গেলেই আমাকে প্রশ্ন করা হয় আপনাদের দেশে এত সিজার কেন হয়। ডব্লিউএইচওর প্রটোকল অনুযায়ী সিজারিয়ান রোগী ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা নয়। আমাদের কাছে ডব্লিউএইচওর এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর থাকে না।

অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোলজিক্যাল সোসাইটির ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, দেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে গাইনি চিকিৎসক কম। উপজেলায় গাইনি চিকিৎসক থাকতে চান না, কিংবা থাকতে পারেন না। বাংলাদেশ তো আর আমেরিকা নয়, কিছু সমস্যা রয়েছে। কিছু সমস্যা তো থাকবেই। আমাদের অনেক সমস্যা দূর হয়েছে। আধুনিক হাসপাতাল হয়েছে। রাস্তাঘাট ভালো হয়েছে। ইন্টারনেটও পৌঁছে গেছে। কিন্তু আমরা প্রায় অভিযোগ শুনতে পাই, উপজেলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের অভাবে সন্তান প্রসব করানো যায় না। ফলে সন্তানসম্ভবা নারীরা বেসরকারি হাসপাতালে যান। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল পারলে সরকারি কেন পারবে না।

স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি বর্তমানে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশ পোলিও ও টিটেনাসমুক্ত হয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার অনেক কমিয়েছি। কিন্তু এসডিজি অর্জন করতে হলে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০-এ নামিয়ে আনতে হবে। যেটি এখন ১৬৪। অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি কমাতে হবে। শিশুমৃত্যুর হার ১২-এ নামিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, আটটি বিভাগে আটটি হাসপাতাল হচ্ছে। যেখানে ক্যানসার, কিডনি ও হার্টের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রতিটি জেলায় একটি করে ৩০ শয্যার মা ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করবো। এরই মধ্যে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ও ডায়ালাইসিসের কাজ প্রায় শেষের পথে। হাসপাতালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হচ্ছে। হেলথ সেক্টরের ডিজিটাইজেশনের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। আগামীতে আমরা এ সুফল পাবো।

অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোলজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ডা. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জনের সভাপতি অধ্যাপক. ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, ইন্টারন্যাশনাল অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি ডা. জেনি এ কনরি, সোসাইটির সাবেক সভাপতি ডা. টি এ চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক শাহেলা খাতুন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।