‘বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছে ছিল পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি যাবেন’

ফানাম নিউজ
  ২৫ জুন ২০২২, ১২:২৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ইচ্ছে ছিল পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি যাবেন, তিনি বেঁচে থাকলে আজ খুব খুশি হতেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

শনিবার (২৫ জুন) সকালে মাওয়ায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

সেলিম বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। তারপরেও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। তবুও সেই বিরোধিতাকারীরা থেমে নেই। আপনারা থাকবেন না, কিন্তু এই সেতু থাকবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছে ছিল পদ্মা ও অন্যান্য নদীতে ব্রিজ করা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম কী পরিহাস, তার কন্যা শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাবতেন, যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যত সুন্দর, সেদেশের উন্নতিও বেশি হয়। আমরা সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছি।

তথ্যমতে, বাংলাদেশের বুকে সবচেয়ে বড় অবকাঠামোর নাম পদ্মা সেতু। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের সেতুটি ঢাকা বিভাগের দুই জেলা মুন্সীগঞ্জ আর শরীয়তপুরকে সংযুক্ত করেছে। সেতুর ডাঙার অংশ যোগ করলে মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার। স্টিল আর কংক্রিটের তৈরি দ্বিতল সেতুর ওপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক আর নিচে একক রেল পথ। উদ্বোধনের দিন থেকেই সেতুতে দৈনিক ১২ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

বিশ্বের খড়স্রোতা নদীর তালিকায় আমাজনের পরেই পদ্মার অবস্থান। এমন খরস্রোতা নদীর ওপর বিশ্বে সেতু হয়েছে মাত্র একটি। তাই সেতুকে টেকসই করতে নির্মাণের সময় বিশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি উচ্চমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়।

পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ আর স্প্যান ৪১টি। খুটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়। অর্থাৎ প্রায় ৪০ তলা ভবনের উচ্চতার গভীরে পাইল নিয়ে যেতে হয়। বিশ্বে এখন পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীর পাইলিং হয়নি।

পদ্মা সেতুর পাথর ভারতের ঝাড়খণ্ড থেকে আমদানি করা, যার একেকটির ওজন একটন। সেতুকে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করতে ফিকশন পেন্ডুলাম বেয়ারিং লাগানো হয়েছে; যা রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকতে পারবে। বিশ্বে কোন সেতুতে এত শক্তিশালী বেয়ারিং লাগানো হয়নি।

সেতুর পাইলিং ও খুঁটির অংশে অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা অতিমিহি সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়। নদী শাসনে চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়, এ কাজে বিশ্বে এতো বড় দরপত্র আর হয়নি।

পদ্মা সেতুতে রয়েছে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা। সাধারণ আলোক সুবিধার পাশাপাশি সেতুতে রয়েছে আলোকসজ্জা ও সৌন্দর্য বর্ধনে রয়েছে আর্কিটেকচার লাইটিং।

স্বাভাবিক সময়ে নদীর পানি থেকে সেতুর উচ্চতা প্রায় সাত ফুট। এর নিচ দিয়ে পাঁচ তলা উচ্চাতার নৌযান চলাচল করতে পারবে।

৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচে নির্মিত পদ্মা সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সংযোগ স্থাপন করেছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সেতুটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের বুকে এক রোল মডেল।

সূত্র: আরটিভি