অশনি দুর্বল হবে, ভারী বৃষ্টি চলবে

ফানাম নিউজ
  ১১ মে ২০২২, ০৮:৩১

ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভারতের দক্ষিণ অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করে উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি আরও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, অশনি দুর্বল অবস্থায় বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোতে পারে। তবে এর বাতাসের গতি কমে গিয়ে তা দমকা হাওয়ায় পরিণত হতে পারে। অবশ্য ঘূর্ণিঝড়টির সঙ্গে আসা মেঘের কারণে সারা দেশে ১৩ মে পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। 

মঙ্গলবার রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূল থেকে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের কাছে আসতে আসতে এর বাতাসের গতিবেগ ৬৫ থেকে ৮০ কিলোমিটারে নেমে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালীতে ওই গতিতে বাতাস বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হওয়া বৃষ্টি আরও তীব্র হতে পারে। সারা দেশেই বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় অশনির অগ্রভাগের সঙ্গে আসা মেঘ দেশের উপকূল দিয়ে প্রবেশ করে সিলেট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৃষ্টি আরও দু-এক দিন চলতে পারে। এর মধ্যে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হতে পারে। এসব উপকূলীয় এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অর্থাৎ এসব এলাকায় ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। আগামী এক থেকে দুই দিন ওই বৃষ্টি চলতে পারে।

এদিকে দমকা হাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং কক্সবাজারকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। দেশের উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ এবং দক্ষিণাঞ্চলের ১৭টি জেলার নদ-নদীর জন্য ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কারণ, ওই নদ-নদীতে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার গতিতে দমকা হাওয়া, বজ্রসহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে, বুধবার থেকে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টি বেশি হতে পারে। মঙ্গলবার দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে, ৮০ মিলিমিটার। রাজধানীতেও সকাল থেকে সারা দিনে ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। চাঁদপুর ও নীলফামারী ছাড়া সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি ঝরেছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি জেলায় প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ পাঠানো হয়েছে। এসব জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে ঝড়ের গতিবিধি ও বাতাসের তীব্রতা দেখে মন্ত্রণালয় মনে করছে, উপকূলীয় জনগণকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে হবে না। তবে যেকোনো মুহূর্তে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে উপকূলবাসীকে নেওয়ার দরকার হলে সেই প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।

আবহাওয়া এর পাঠক প্রিয়