স্বাস্থ্যের জন্য উন্নয়ন সহায়তা বজায় রাখুন: প্রধানমন্ত্রী

ফানাম নিউজ
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী হলো ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (ইউএইচিসি)। তবে তা অর্জনযোগ্য। বাংলাদেশে সবার জন্য স্বাস্থ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিশেষায়িত মেডিকেল হাসপাতাল পর্যন্ত একটি দেশব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা তৃণমূলে বেসরকারি অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে ইউএইচসি বিষয়ে ইউএনজিএ হাই-লেভেল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ সুফল বয়ে এনেছে। আমরা প্রতি এক লাখ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যুর হার ১৬৩-এ কমিয়ে এনেছি। নবজন্মের মৃত্যুহার প্রতি হাজারে জীবিত জন্মে ১৫ এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর হার ২৮-এ নেমে এসেছে। শিশু টিকাদানের উপর আমাদের জোর দিয়েছি। যা সার্বজনীন কভারেজ অর্জন করেছে। আমাদের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছরের কাছাকাছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। আমরা এখন ডেঙ্গু মোকাবিলায় হাই অ্যালার্টে কাজ করছি। আমরা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের জন্য উন্নত চিকিৎসা চালু করছি। মানবিক ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আদর্শ হয়ে উঠেছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়বিক ব্যাধিগুলির বিষয়ে আমাদের নীতি এবং পদক্ষেপ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। আমরা সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল পদ্ধতিতে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করি। অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের বিরুদ্ধে প্রস্তুতির জন্য আমরা একটি "ওয়ান হেল্থ অ্যাপ্রোচকে’ উৎসাহিত করে থাকি। আমরা পুষ্টি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা এবং ডুবে যাওয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করছি।

তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সাধ্যের বাইরে স্বাস্থ্য ব্যয়ের জন্য কাউকে যেন ভুগতে না হয় । আমাদের জনসংখ্যার প্রায় ৮০% মানুষকে শূন্য বা সর্বনিম্ন খরচে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে থাকি। প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনীর সাথে তাদের পরিষেবার মান উন্নত করার উপর জোর দিয়ে থাকি আমরা। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো স্বাস্থ্য ব্যয় পরিশোধের জন্য একটি কার্যকর ফাইন্যান্সিং মডেল গড়ে তোলা। বাংলাদেশে, আমাদের ওষুধের চাহিদার ৯৮% পূরণ করি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে।

দেশের সরকার প্রধান বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে আমাদেরকে সহায়তা সমর্থনের জন্য অনুরোধ করছি: প্রথমত, শিশু, মা ও কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যের জন্য উন্নয়ন সহায়তা বজায় রাখা এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু-স্বাস্থ্য সম্পর্ককে মোকাবেলা করা; দ্বিতীয়ত, সকলের জন্য স্বাস্থ্য আইডি সহ একটি স্বাস্থ্য তথ্য সিস্টেম বিকাশে দক্ষতা ভাগাভাগি করা; তৃতীয়ত, আমাদের প্রেক্ষাপটে উপযোগী একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প বিকাশে সহায়তা করা; চতুর্থত, দ্রুত বর্ধনশীল স্বাস্থ্য-প্রযুক্তি স্টার্ট আপ সহ স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো; এবং, পঞ্চম, জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য পেটেন্ট প্রকাশ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের টিআরআইপি বাধ্যবাধকতা মেনে চলা।

প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মহলকে উদ্দেশ্য করে ভাষণের শেষ অংশে বলেন, আমাদের প্রজন্ম ইউএইসচসি উৎসাহিত করে ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারে। আসুন আমরা সবাই হাত মিলিয়ে সেটা সম্ভব করে তুলি।