আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১০০০, আহত ১৫০০

ফানাম নিউজ
  ২২ জুন ২০২২, ১১:৫৩
আপডেট  : ২২ জুন ২০২২, ১৯:৫৩

মঙ্গলবার মধ্য রাতের পর আফগানিস্তানের পাকতিকা ও খোস্ত প্রদেশে আঘাত হানা ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০০০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা। আর আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০০ জনে। খবর বিবিসির।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের গ্রামগুলোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে কারণে ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।

আফগানিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের আঘাতে ব্যাপক ভুমিধসের ঘটনা ঘটেছে এবং অনেক মাটির তৈরি ঘরবাড়ি একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং মৃতদেহ মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আইয়ুবী জানান, কিছু গ্রাম পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতেও কিছুটা সময় লাগবে।
 
আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ খোস্তের রাজধানী শহর খোস্ত থেকে আনুমানিক ৪৪ কিলোমিটার দূরে গতকাল রাতে ৬.১ মাত্রার এক শক্তিশালী ভুমিকম্প আঘাত হানে।

আফগান সরকারের মুখপাত্র বিলাল করিমি জানিয়েছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত রাত দেড়টার দিকে পাকতিকা প্রদেশের চার জেলায় ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। যখন সবাই ঘুমিয়ে ছিল।

আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকাজুড়ে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

তালেবানের শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা বলেছেন, ভুমিকম্পে শত শত ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভূমিকম্পে যারা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশের। এই প্রদেশে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৫৫ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

স্থানীয় একজন চিকিৎসক বিবিসিকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে পাকতিকা প্রদেশের গায়ান ও বারমাল জেলায়। স্থানীয় গণমাধ্যম ইতিলাত-ই রোজ জানিয়েছে, গায়ানের পুরো একটি গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে।

ভৌগলিকভাবে আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। দেশটি টেকটোনিকভাবে সক্রিয় অঞ্চলে অবস্থিত। চমন ফল্ট, হরি রুদ ফল্ট, সেন্ট্রাল বাদাখশান ফল্ট এবং দরভাজ ফল্ট সহ বেশ কয়েকটি ফল্ট লাইনের উপর অবস্থিত আফগানিস্তান।

২০০২ সালের পর বুধবারের এই ভূমিকম্পটি আফগানিস্তানে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। গত ১০ বছরে দেশটিতে ভূমিকম্পে ৭ হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয়। তাদের হিসাব মতে, দেশটিতে ভূমিকম্পে বছরে গড়ে ৫৬০ জন মানুষ মারা যায়।