১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের কবিতা ভাত দে হারামজাদা উদ্ধৃত করে যা বললেন মঞ্জু 

ফানাম নিউজ
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:৪৩

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ার হোসাইন মঞ্জু ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের স্মৃতি টেনে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি কবি রফিক আজাদের বিখ্যাত কবিতা “ভাত দে হারামজাদা” উদ্ধৃত করে বলেন, সেই সময় ক্ষুধা-দারিদ্র্যের প্রতিবাদ যেমন কবিতায় ফুটে উঠেছিল, আজ তেমনি রাজনীতির ভাষায় গালিগালাজ প্রভাব বিস্তার করছে।

মঞ্জুর লেখায় উঠে এসেছে রাজনৈতিক স্লোগানের বিবর্তন। পাকিস্তান আমলে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও সৃজনশীল স্লোগান যেমন ছিল—“আইয়ুব-মোনায়েম ভাই ভাই, এক রশিতে ফাঁসি চাই”—স্বাধীনতার পর তা বদলে অশ্লীলতায় পর্যবসিত হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে ছাত্ররাজনীতিতে “একটা একটা লীগ ধরো সকাল বিকাল নাশতা করো” থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ-শিবির দ্বন্দ্বে “ধইরা ধইরা জবাই করো” ধরনের ভয়াবহ স্লোগান পর্যন্ত এসেছে।

তার মতে, আজকের ছাত্রছাত্রীরা এমনকি নারীর শরীরের গোপন অঙ্গও স্লোগানে ব্যবহার করছে। ‘শাউয়া’ জাতীয় শব্দগুলো রাজপথে নিয়মিত উচ্চারিত হচ্ছে। মঞ্জুর প্রশ্ন—এগুলো কি কেবল স্বতঃস্ফূর্ত, নাকি পরিকল্পিত?

তিনি আরও লিখেছেন, সমাজে গালির প্রচলন নতুন নয়। অতীতে তা পতিতালয়, উপন্যাস কিংবা আড্ডায় সীমিত থাকলেও এখন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মুখে রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। “বিপ্লব কোনো মিলাদ মাহফিল নয়” উল্লেখ করে অনেকেই মনে করেন, অশ্লীল শব্দ মজলুমের প্রতিরোধের ভাষা।

তুলনামূলক আলোচনায় মঞ্জু দেখিয়েছেন—ইরানি সমাজে গালি সীমিত, উত্তর ভারতের লখনউ শহরে এমনকি গালিও শালীনতায় মোড়ানো। অন্যদিকে পাশ্চাত্যে কিছু সাধারণ গালি প্রচলিত থাকলেও বাঙালির মতো সমৃদ্ধ ভাণ্ডার নেই।

পোস্টের শেষে তিনি বলেন, গালি কখনো কখনো সহিংসতার বিকল্প হতে পারে, তবে ভাষার সৃজনশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানান। তার মতে, “গালির ভাষা যদি সমাজের প্রতিবাদ হয়, তবে সেটিকে কীভাবে শৈল্পিক ও মাধুর্যপূর্ণ করা যায়, সেটি ভাবার দায়িত্ব সমাজবিজ্ঞানীদের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়