শিরোনাম
পণ্য সরবরাহ বাবদ প্রায় ২০০ কোটি টাকা ফেরত দিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং ডটকমের কর্তৃপক্ষকে পাঁচদিন সময় বেধে দিয়েছেন বিক্রেতারা। এর মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে ধামাকার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি ধামাকা শপিং ডটকমের সঙ্গে লেনদেন বিষয়ে সৃষ্ট জটিলতার সুষ্ঠু সমাধানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় বিক্রেতাদের সংগঠন ধামাকা শপিং ডটকম সেলার অ্যাসোসিয়েশন।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, মাইক্রোটেড গ্রুপের আওতাধীন ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালিত ধামাকা শপিং ডটকমে প্রায় ৬৫০ জন সেলার বা মার্চেন্ট হিসেবে পণ্য বিনিয়োগ করেছেন। প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা সেলাররা পাননি।
তিনি বলেন, দেশের স্বনামধন্য অর্থোপেডিক চিকিৎসক, এভারকেয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও জয়েন্ট কেয়ার কো-অর্ডিনেটর ডা. এম আলী (মো. মোজতবা আলী) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসিমউদ্দিন চিশতীর ওপর আস্থা রেখে এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সিরাজুল ইসলাম রানা, প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা দেবকর দে শুভ, ডিএমডি নাজিমউদ্দিন আসিফ, পরিচালক অপারেশন সাফোয়ান আহমেদ, এজিএম ও হেড অব অ্যাকাউন্টস আমিনুর রহমান, ক্যাটাগরি হেড ইমতিয়াজ হাসানের অনুরোধ ও উপস্থিতিতে ২০২০ সালে ডিসেম্বর থেকে ধামাকার নির্দেশনা ও চুক্তি অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করে যাচ্ছিলাম। ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে পণ্য সরবরাহের জন্য সেলারদের সঙ্গে চুক্তিতে স্পষ্ট লেখা ছিল যে, পণ্য সরবরাহের অর্ডারের কপি (পিও) পাওয়ার পর পণ্য সরবরাহ করে বা তাদের নির্দেশিত গ্রাহকদের পণ্য দিয়ে বিল সাবমিট করার ১০ কর্মদিবসের মধ্যে ধামাকা শপিং ডটকম পাওনাকৃত অর্থ পরিশোধ করবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই ১০ দিবস এখন ১৬০ এর বেশি দিবসে অতিবাহিত হয়েছে।
তিনি বলেন, পাওনাকৃত টাকা উদ্ধারে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কেউই সেলারদের সঙ্গে বসেননি। শত অনুরোধে করার পর কোম্পানির দুইজন মালিকের মধ্যে প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসিম উদ্দিন চিশতী মাঝে মাঝে ভার্চুয়াল সভা ও ফেসবুকে লাইভ প্রোগ্রাম করে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই তিনি রক্ষা করেননি।
সেলাররা বলেন, আমরা আমাদের শেষ সম্বল, আত্মীয়স্বজন ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়ে গেছি। ধামাকা শপিং যেন আগের মতো ন্যায় কার্যক্রম চালু করে সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য সহকারে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। সেলারদের পক্ষ হতে এখন পর্যন্ত কোনো সাধারণ ডায়েরিও করা হয়নি। পাওনা টাকার বিপরীতে অধিকাংশ সেলার ধামাকা হতে ব্যাংক চেক না পাওয়ায় জসিম উদ্দিন চিশতী ও কর্তৃপক্ষের নিকট সরাসরি ও একাধিকবার ভার্চুয়ালভাবে চেক দেয়ার আবেদন করার পরও বাজ পর্যন্ত চেক প্রদান করা হয়নি।
সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ইমন বলেন, ধামাকার মালিকপক্ষ যদি আমাদের টাকা ফেরত না দেয় তাহলে আমাদের আইনের আশ্রয় নিতে হবে। তারা যদি পুরো টাকা না দিতে পারে, অল্প অল্প করে দিয়ে দিক। গ্রাহক-বিক্রেতাদের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আবেদন জানান তিনি।
এর আগে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ধামাকা শপিংয়ের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শত কোটি টাকার বেশি মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ অভিযোগে ৯ সেপ্টেম্বরে ধামাকার মালিক জসীম উদ্দিনসহ পাঁচজন এবং তাদের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করে সিআইডি।