শিরোনাম
করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।চলতি বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল ও কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের পর থেকে খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সূত্র: যুগান্তর
গত ২৭ আগস্ট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এখন বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র বিদ্যমান। এখনো বাংলার আকাশে ষড়যন্ত্রের গন্ধ। সতর্ক থাকতে হবে। সামনের দিনে আরও চ্যালেঞ্জ আছে। দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর একটি গোষ্ঠী উচ্ছ্বসিত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর এখানে যারা উল্লসিত তাদের মতলব কী, উদ্দেশ্য কী- তা বুঝতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চলছে। ফলে অনেক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এবার মাঠে নামবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরেই তারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি নিচ্ছে, শেখ হাসিনার সরকার হটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে এমন নানান সমস্যা আসতে পারে। গত ২ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি এক বৈঠকের সিদ্ধান্তের উদ্ধৃতি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৯ সেপ্টেম্বর ইউজিসিকে এক চিঠি দিয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে। পুনরায় চালু হওয়ার পর যেন কোনো ধরনের ‘অরাজক পরিস্থিতি’ তৈরি না হয়, প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় ওই চিঠিতে।
ওই চিঠির পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার পর ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা বসানো হবে। একইসঙ্গে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসগুলোকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হবে। পাশাপাশি যে কোনো ধরনের ‘নৈরাজ্য’ ও ‘জঙ্গিবাদ প্রচার’ হওয়ার আশঙ্কা সংক্রান্ত কোনো তথ্য আছে কি না- সে বিষয়ে জানতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৈঠক সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার পর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনবে। তাছাড়া ক্যাম্পাসের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টদের বিশেষ নজরদারি থাকবে। তবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্ন হয়- এমন কিছুই করা হবে না।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই চিঠিতে ইউজিসিকে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ধরনের ‘জঙ্গিবাদ প্রচার’ হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশপথসহ ক্যাম্পাসের স্পর্শকাতর জায়গাগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনবে। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৈঠকের বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে ইউজিসির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আমাদের নিজেদেরও নানা ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেসব বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে।
বৈঠকের সভাপতি ও মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম একটি গণমাধ্যমকে বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কী করণীয়- তা ঠিক করতে বৈঠক হয়।
বৈঠক সূত্রের ভাষ্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তারপরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং প্রবেশপথসহ ক্যাম্পাসের স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।