নারী ইউএনও দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে কাদের সিদ্দিকীর বাধা

ফানাম নিউজ
  ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০৩

টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর নারী ইউএনওর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে (গার্ড অব অনার) বাধা দিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম)। শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর দুইটায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের (নয়া মুন্সি) মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী ইউএনও এলে তাকে বাধা দেন তিনি।

এ সময় তিনি একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে বলেন। এরপর ইউএনও চলে গেলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে অবশ্য কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নারী ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুর বাজারের নিজ বাড়িতে মারা যান। শনিবার দুপুর ২টায় সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজার নামাজের আগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদর্শনের সময় ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী কর্মকর্তা আসায় বাধা দেন তিনি।

জানাজার নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী ইউএনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কোনো মহিলার গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার লাশের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে লাথি মেরে ঢাকায় পাঠাতাম।’

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার কারণে এই ইউএনওকে ৩০ এপ্রিল মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আব্দুল হামিদ খান একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশের উত্থান-পতনের কারণে স্বাধীনতা অর্থবহ হয়নি, মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পায়নি। স্বাধীনতার শত্রুরাও যতখানি দাপটে চলাফেরা করে, জীবন দিয়ে যারা স্বাধীনতা এনেছেন তাদের অনেকেই ততটুকু করতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, পুলিশের গার্ড অব অনার নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত। রাত ১২টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও শনিবার দুপুর দুইটার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে কেউ আসেননি। নারী যত বড়ই হোক নারীদের জানাজায় শামিল হওয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, আমি জানাজার নামাজ পড়তে যাইনি। আমি গিয়েছিলাম বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী হাজার লোকের সামনে আমাকে অপমান করেছেন। কাদের সিদ্দিকী নিঃসন্দেহে একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।