‘নির্মাণ হচ্ছে ১২ হাইটেক পার্ক, চালু হবে ২০২৬ সালে’

ফানাম নিউজ
  ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:০৯

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করছে সরকার। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় এসব পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এসব পার্ক চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পার্কগুলো চালু হলে আগামী পাঁচ বছরে ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। আইসিটি খাত থেকে আয়ের পথ তৈরি হবে। এজন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দিন দিন দৃঢ় হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতের সহযোগিতা পেয়েছিলাম। বাংলাদেশের মানুষকে ভারত আশ্রয় দিয়েছিল, খাবার দিয়েছিল ও অস্ত্র দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। এমনকি তারা জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। করোনাকালে দেখেছি ভারত সরকার আমাদের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারত পাশে ছিল। এখনো আমাদের চলমান অনেক প্রকল্প রয়েছে। ১৯৩ মিলিয়ন ডলারে ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। তার প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ। আশা করছি ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১২টি হাইটেক পার্কই চালু হবে। লাইন অব ক্রেডিটে এই কনসেশনাল লোন দিয়েছে ভারত, খুব কম সুদে দীর্ঘ মেয়াদি। এটা হাইটেক পার্ক অথরিটির আওতায় নির্মাণ হচ্ছে।’

তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অপচয় রোধ করে আইসিটি খাতে রফতানি আয় বাড়াতে হবে, আমাদের আইসিটি টেলিকম সেক্টরে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে, আমাদের স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে— এই তিন জায়গায় ভারতের সহযোগিতা পাব বলে প্রত্যাশা করছি। পাশাপাশি ছয়টি স্থানে বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস ইমপ্লিমেন্ট ট্রেনিং সেন্টারেরর কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেখানেও আমাদের ৩০ হাজার ছেলে-মেয়েকে রোবটিক্স ও ডেটা’র মতো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারব।’

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘দুই দেশের সাইবার জগৎ নিরাপদ রাখার জন্য আমরা একটি এমওইউ করেছিলাম। সেটার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখন আমরা দুই দেশে একত্রিত হয়ে সাইবার ড্রিল পরিচালনা করব। যাতে করে বাংলাদেশ-ভারতের সাইবার স্পেসসহ সারাবিশ্বে সাইবার জগতটাকে নিরাপদ রাখার জন্য দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। একইভাবে ডিজিটাল ভারত বিনির্মাণে দেশটির পাশে থাকবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি আমাদের ডাটা সেন্টার নির্মাণ করা, আমাদের বেসরকারিখাতে পোস্ট, টেলিকম ও আইসিটি সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘গত ৫ বছরে ১ বিলিয়ন ডলার আমাদের স্টার্টআপে বিনিয়োগ হয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ বিনিয়োগ আসছে আমেরিকা, ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে। আর কিছু অংশ আসছে জাপান থেকে। ভারতে আমাদের খুব অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র। তাদের প্রায় দেড় বিলিয়ন জনগোষ্ঠী। আমাদের একটা প্রোডাক্ট যদি ভারতে বিক্রি করতে পারি, সেটা সফটওয়্যার হোক, আর হার্ডওয়্যার, কারণ বিশাল মার্কেট আমাদের ঘরের কাছে।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিটিসিএল, টেলিটক, পোস্ট, আইসিটি সেক্টরে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও আইটি ট্রেনিং সেন্টারখাতে সরকারিভাবে বিলিয়ন ডলারের ওপরে বিনিয়োগ করার সুযোগ আছে। বেসরকারি খাতেও বিলিয়ন ডলারের ওপরে বিনিয়োগের সুযোগ আছে। বাংলাদেশ থেকে আইসিটি পণ্য রফতানি পাঁচ বিলিয়নে ডলারে উন্নীত করতে চাই। অর্থাৎ আগামী ৫ বছরে ১০ লাখ তরুণ- তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। এই পাঁচ বছরে আমাদের আগামীর ৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণের যে ভিত্তি তা রচনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে। আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাব।’

ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভারত পাশে থাকবে। দুই দেশের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবে। তরুণদের কিভাবে আরও প্রযুক্তিনির্ভর ও কর্মমুখী করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’