ঘর ভাড়া নিয়ে তৈরি হয়েছিল ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়, কিন্তু বছর পার হলেও পরিশোধ হয়নি এক টাকাও। বারবার তাগাদা দিয়েও কাজ হয়নি। বরং বকেয়া ভাড়া চাওয়ায় ভয়াবহ পরিণতি—নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে কার্যালয়ের ভেতরেই নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ঘর মালিক জাহাঙ্গীর হোসেনকে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৮) ওই এলাকার তালেব আলীর ছেলে। সালমদী বাজারে তার ৪টি দোকান রয়েছে। তিনি পেশায় মুদি দোকানি ছিলেন।
নিহতের ছেলে রাসেল মিয়া জানান, মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মিয়া প্রধান সালমদী বাজারে তার বাবার কাছ থেকে বছরে ৩০ হাজার টাকায় ৩টি দোকান ভাড়া নেন। এর একটিতে বিএনপির কার্যালয় স্থাপন করেন। বাকি ২টি দোকানের ভাড়া পরিশোধ করলেও যে দোকানটিতে বিএনপির কার্যালয় করেছেন সেটির ভাড়া পরিশোধ করছিলেন না। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ভাড়া চাইতে বিএনপি কার্যালয়ে তোতা মেম্বারের কাছে যান। তখন উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তোতা মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া, রাসেল মিয়া, ভাতিজা সাদ্দাম হোসেন, আলম হোসেনসহ তার সহযোগীরা বিএনপি কার্যালয়ে পিটিয়ে আহত করে। এ সময় তার বাবা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তার বাবাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর থেকে বিএনপি নেতা তোতা মেম্বার ও তার অনুসারীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে তোতা মিয়ার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম শিকারি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটালে বিএনপি দায় নেবে না। অপরাধী যেই হোক তার শাস্তি হওয়া উচিত। বিএনপি অপরাধীদের প্রশ্রয় দেয় না।
আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া বলেন, বিএনপি কোনো অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। তার একটাই পরিচয় অপরাধী। দলের নাম ব্যবহার করে যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আড়াইহাজার থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। দাফন শেষে মামলা হবে।