এবার নাসার টেলিস্কোপে ধরা পড়ল গ্রহে পানির অস্তিত্ব

ফানাম নিউজ
  ১৪ জুলাই ২০২২, ০৯:০৮

আমাদের এই আকাশগঙ্গার ছায়াপথের দূরতম স্থানে পৃথিবীসদৃশ একটি গ্রহে পানি থাকার চিহ্ন শনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১ হাজার ১৫০ আলোকবর্ষ দূরে ডব্লিউএএসপি–৯৬বি নামের ওই গ্যাসীয় গ্রহটির অবস্থান। সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রকে ঘিরে আবর্তন করা উষ্ণ বায়ুমণ্ডলের পৃথিবীসদৃশ ওই গ্রহে (এক্সোপ্লানেট) মেঘ ও কুয়াশা থাকার প্রমাণও মিলেছে।

পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বৃহত্তম টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব। এটি নাসা, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ও কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির বানানো। এই টেলিস্কোপ তৈরি করা হয়েছে দূর মহাকাশে, মহাবিশ্বের শুরুর দিকে গ্যালাক্সি সৃষ্টির সময়কে দেখার জন্য। সম্প্রতি এ টেলিস্কোপ মহাকাশের ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের অবস্থা ধারণ করে।

আজ নাসার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্রহ হিসেবে এখন পর্যন্ত ডব্লিউএএসপি–৯৬বিকে বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে এ টেলিস্কোপ দিয়ে। এ থেকে দূরবর্তী পৃথিবীসদৃশ গ্রহটির বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করার জন্য এ টেলিস্কোপের অভূতপূর্ব সক্ষমতা লক্ষ করা গেল। আমাদের এই আকাশগঙ্গার ছায়াপথে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি গ্রহ শনাক্ত হয়েছে।

নাসার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ-আকাশের নক্ষত্রমণ্ডল ফিনিক্সে অবস্থিত এই গ্রহটির সঙ্গে আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলোর সরাসরি কোনো সাদৃশ্য নেই। এর ভর আমাদের বৃহস্পতি গ্রহের অর্ধেকেরও কম এবং ব্যাস ১ দশমিক ২ গুণ বেশি। এটি আমাদের সৌরজগতের যেকোনো গ্রহের চেয়ে বেশি স্ফীত। এখনকার তাপমাত্রা ৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

নাসার তথ্য অনুযায়ী, ডব্লিউএএসপি–৯৬বি তার সূর্যের মতো নক্ষত্রের খুব কাছাকাছি প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর প্রতি সাড়ে তিন দিনের মতো সময়ে নক্ষত্রকে আবর্তন সম্পন্ন করে। এই গ্রহের বিশাল আকার, সংক্ষিপ্ত আবর্তনকাল, স্ফীত বায়ুমণ্ডল ও দূষিত আলোর বাধা না থাকায় এর বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ করার জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়েছে।

এর আগে হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে দুই দশক ধরে অসংখ্য গ্রহের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে পানির পরিষ্কার অস্তিত্বের কথাও জানানো হয়েছে। তবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে আরও বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ পাওয়া সম্ভব হওয়ায় পৃথিবীর বাইরে সম্ভাব্য বাসযোগ্য গ্রহ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে বলে মনে করছে নাসা।