কুমিল্লার মুরাদনগরে একটি বাড়ি ঘেরাও করে নারীসহ একই পরিবারের ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী। তাদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। এ ঘটনায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান।
নিহতরা হলেন- কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার ওরফে রুবি (৫৩), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৫)।
এ ছাড়াও গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (৩০)। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, রুবি ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী হামলা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের কারণে এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে তাদের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধভাবে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ জন মারা যান এবং একজন গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। আহত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বাঙ্গরা বাজার থানার উপপরিদর্শক মো. নাহিদ জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য কর্মকর্তারা ছুটে এসেছেন। তদন্ত চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, পরিবারটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এর জের ধরেই এলাকাবাসী পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ ও জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে।