ইকো ফ্রেন্ডলি বা ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার সময় উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর উপযোগিতা ও বাস্তবতা বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, অনেক সময় আমরা ক্লাইমেট স্মার্ট বা ইকো ফ্রেন্ডলি বলি, কিন্তু প্রযুক্তিটি বাস্তবিকভাবে উপযোগী কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। আমরা যাদের নিয়ে কাজ করি—যেমন মৎস্যজীবী বা উপকূলীয় জনগোষ্ঠী—তাদের যেন ছোট করে না দেখি। এটা যেন না ভাবি যে, বিষয়টা আমরা বুঝি, ওরা বোঝে না, তাই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বাংলাদেশের জন্য আইএমটিএ উপযোগিতা বিশ্লেষণ, আইএমটিএ প্রজাতির ভ্যালু চেইন স্টাডি, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক খাতের দ্রুত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও পরিবেশ ও জলবায়ু প্রভাব মূল্যায়ন সম্পর্কিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নিশ্চয়ই উপকূলের সাধারণ মানুষের চিন্তার মধ্যেও এমন কিছু আছে, যা আমাদের শেখার আছে। শুধু ইকো ফ্রেন্ডলি বা ক্লাইমেট স্মার্ট শব্দ ব্যবহার করে আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়। জলবায়ু পরিবর্তনসহ সামনে আমাদের বহু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।
তিনি বলেন, আইএমটিএ প্রযুক্তি বাংলাদেশে নতুন একটি বিষয়, এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক হতে হবে। ওয়ার্ল্ডফিশের সঙ্গে বিএফআরআই, মৎস্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত আছে জেনে আমি আনন্দিত ও আশ্বস্ত হয়েছি। আশা করি তারা সমন্বিতভাবে এ প্রযুক্তি আরও এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে আইএমটিএ উৎপাদিত পণ্য-সিউইড, সবুজ ঝিনুক ইত্যাদি বাজারজাতকরণের সরকারি ও বেসরকারিভবে উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে ফরিদা আখতার বলেন, আমাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে, যাতে উপকূলীয় জনপদের মানুষের জীবন-জীবিকায় কোনো ক্ষতি না হয়। বিশেষ করে নারীদের যেন কোনোভাবে ক্ষতির মুখে না পড়তে হয়। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, এই প্রকল্প যেন উপকূলীয় জনগণের ও দেশের উপকারে আসে।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের নেতৃত্বে এবং যুক্তরাজ্য সরকারের ব্লু প্লানেট ফান্ডের অর্থায়নে পরিচালিত ‘এশিয়া-আফ্রিকা ব্লুটেক সুপারহাইওয়ে (এএবিএস)’ প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়। ২০২৩-২০৩০ সময়কাল মেয়াদি প্রকল্পটি এশিয়া ও আফ্রিকার উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে দক্ষতা বিনিময়, টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল অ্যাকুয়াটিক খাদ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সমুদ্র ও উপকূল সংরক্ষণে উৎসাহ প্রদানে গুরুত্বারোপ করছে।