‘মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা নীতিগত সিদ্ধান্ত, আইনি বিষয় নয়’

ফানাম নিউজ
  ০৬ মে ২০২৪, ০৮:০২

উপজেলা নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের স্বজনদের সরে দাঁড়ানোর যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে ‘আইনের কোনো সম্পর্ক নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, এটা একান্তই তাদের দলের ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’।

রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন কাদের।

তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত, এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই।”

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদেরও প্রার্থী হতে নিষেধ করেছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘দলীয় কোন্দল নিরসন এবং নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতেই’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের নেতাদের ভাষ্য।

এরপরও কেউ ভোট থেকে সরে না দাঁড়ালে বহিষ্কারসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশে সরকার এমন নির্দেশনা দিতে পারে কী না, সেই প্রশ্ন ইতোমধ্যে উঠেছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, নির্বাচন করার অধিকার সবারই আছে। যার বয়স, ১৮ বছরের বেশি, যিনি ভোটার হয়েছেন, এরকম প্রত্যেকেরই নির্বাচন করার অধিকার আছে।

“যদিও এটা আইনের মধ্যে পড়ে না। আইনের পরিপন্থি। এটা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমরা কিন্তু এটা বলিনি। কারণ এটা বলতে পারি না।”

উপজেলা নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন বা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে কাদের বলেন, "প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে– এ ভাবনা থেকে আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না।"

গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকারও সমালোচনা করেন কাদের।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বিভিন্ন দেশের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের দেশে মানবাধিকার যে চোখে দেখে, নিজের দেশে সেই দৃষ্টিতে দেখবে না কেন?

"আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই। তবে সত্য বললে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তো কিছু করার নেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ দমনে যে আচরণ করা হয়েছিল, একই রকম নির্মম আচরণ এখন করা হচ্ছে।"

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, "আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে তারা কথা বলে। আমরা কি এসব নিয়ে কথা বলতে পারব না? আমাদের দেশে তারা যে দৃষ্টিতে মানবাধিকার দেখে সে দৃষ্টিতে নিজের দেশে দেখবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব নেই এমন কথাতো আমরা বলিনি।"

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।