তুরস্কে প্রবল ভূমিকম্প, ৫ শতাধিক মৃত্যু

ফানাম নিউজ
  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:৩৫

তুরস্কের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে কয়েক সহস্রাধিক হতাহতের প্রেক্ষিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে দেশটির সরকার। ভূমিকম্পের তীব্রতার জেরে লেবানন এবং সিরিয়াতেও অনুভূত হয়েছে কম্পন। এছাড়া ইরাক, ইসরায়েল, সাইপ্রাসসহ একাধিক দেশে কম্পন অনুভূত হয়েছে। খবর-বিবিসি, সিএনএনের।

ভূমিকম্পের তীব্রতায় ৩৪টি বহুতল ভবন একেবারে গুঁড়িয়ে গিয়েছে। তুরস্কেই কমপক্ষে ৫৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এছাড়া আহত হয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। আবার সিরিয়াতেও ২৪৬ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও ৫৩২ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা-ইউএসজিএস ভূমিকম্পের আঘাত হানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে তাতে দেখা গিয়েছে একাধিক বহুতল ভেঙে পড়েছে। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ার ছবি দেখা গিয়েছে।

এদিকে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক, লেবাননের রাজধানী বৈরুত এবং বন্দর শহর ত্রিপোলিতে ভূমিকম্পের কারণে লোকজন দৌঁড়ে রাস্তায় বের হয়ে যায়, তাদের ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে আশঙ্কায় কেউ কেউ নিজেদের গাড়ি সেখান থেকে সরিয়ে নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি শহরের পূর্বে। ভূ-কম্পনটির উৎপত্তিস্থলে গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার। জায়গাটি নুরদাগি থেকে ২৩ কিমি পূর্বে অবস্থিত।

গাজিয়ান্তেপের গভর্নর দাভুত গুল টুইটারে বলেছেন, শহরে ভূমিকম্পটি প্রবলভাবে অনুভূত হয়েছে। জনসাধারণকে বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করার এবং শান্ত থাকার পরামর্শও দিয়েছেন গভর্নর দাভুত গুল।

তুরস্কের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলেও শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়েছে। মূল ভূ-কম্পনটি আঘাত হানার প্রায় ১১ মিনিট পর আরেক দফায় আঘাত হানে ভূমিকম্প। ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী আফটারশক মূল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের প্রায় ৩২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে আঘাত হানে। ১৯ মিনিট পরে, ৫ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি তীব্র আফটারশক অনুভূত হয়।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোইলু জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হতাই, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাটিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির ও কিলিস-এই ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভয়াবহ এ ঘটনার পরপরই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান টুইটারে বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ‘তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, পাঠানো হয়েছে উদ্ধারকারী দল। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এবং কম ক্ষতি হয় সেভাবে কাজ করছি।

সবাইকে একসঙ্গে এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার আশাও ব্যক্ত করেন তিনি। যদিও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট টেলিফোনে আটটি ক্ষতিগ্রস্ত শহরের গভর্নরদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে তুর্কি শহর গাজিয়ানতেপের বাসিন্দা এরদেম বলেন, আমি ৪০ বছর ধরে এমন ভয়াবহ ঘটনার মুখোমুখি হয়নি। আমি বেঁচে আছি কিনা এমন অনুভব করতে পারছিলাম না।