পাওনা টাকার জেরে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় রাজমিস্ত্রি মোস্তফাকে

ফানাম নিউজ
  ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৫:৪২

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় চুক্তিভিত্তিক নির্মাণকাজে নিযুক্ত রাজমিস্ত্রি মোস্তফা (৫৫)–কে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

দেশের বিভিন্ন স্থানে কন্ট্রাকে কাজ করতেন রাজমিস্ত্রি মোস্তফা (৫৫)। কাজের সুবাদেই পরিচয় হয় অপর দুই রাজমিস্ত্রি কাজের সহযোগীর সঙ্গে। কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন একটি গ্রামের বিল্ডিংয়ে নির্মাণ কাজ করার সময় পাওনা টাকা নিয়ে ওই দুই সহযোগীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রড দিয়ে পিটিয়ে পাশবিক নির্যাতনে হত্যা করা হয় রাজমিস্ত্রি মোস্তফাকে (৫৫)।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ এক সম্মেলনে এসব জানান র‍্যাব-১১ লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন— মোস্তাকিম হোসেন নাইম (২০), আহমাদুল্লাহ ওরফে বাবু (রিফাত) (২১)।

এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গত (২৮ জুন) রাতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন পূর্ব ভাটিপাড়ায় জনৈক ব্যক্তির নির্মানাধীন ভবনে রাজমিস্ত্রি মোস্তফা (৫৫), হাত-পা বাধা অবস্থায় নির্মমভাবে খুন হয়। 

খুনের ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।  পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার (২জুলাই) র‍্যাব-১১ ও র‍্যাব-৬ এর যৌথ অভিযান পরিচালনা বাগেরহাট জেলার মংলা থানাধীন মোংলা ইপিজেড এলাকা হতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী মোস্তফা (৫৫) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি হওয়ায় নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সে চুক্তিতে কাজ করতেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার আসামিদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। 

কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন মঙ্গলকান্দি গ্রামের একটি বিল্ডিংয়ে নির্মাণ কাজ করার সময় তার কাজ দেখে খুশি হয়ে পাশের গ্রামের জনৈক ব্যক্তি তার বিল্ডিংয়ের কাজ ভুক্তভোগীকে চুক্তিতে কাজ দেয়। পরে গ্রেপ্তার আসামিদের ভিকটিম কাজে নিয়োগ দিলে তারা গত ২১ জুন কাজ করার উদ্দেশ্যে মোস্তফার কাছে যান এবং নিয়মিত কাজ করতে থাকেন। 

পরে গত ২৮ জুন কাজ শেষে পাওনা টাকা নিয়ে মোস্তফার সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি ও বাগ-বিতণ্ডা শুরু হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা চড়াও হয়ে মোস্তফার হাত-পা বেঁধে ছোট রড দিয়ে তার বাম চোখে সজোরে খোঁচা দেয়, যার ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। 

পরে গামছা দিয়ে ভুক্তভোগী মোস্তফার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে এবং তার চোখ-মুখের ওপর দিয়ে লাল রংয়ের স্কচটেপ পেঁচিয়ে নির্মমভাবে পাশবিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে মোস্তফা অচেতন হয়ে পড়লে আসামিরা পালিয়ে মোংলা থানা এলাকায় আত্মগোপন করে। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান তিনি।

আসামিদের কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়